দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানিয়ে প্রতিকী অনশন করেছেন শিক্ষক নিবন্ধধারীরা। রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর এনটিআরসিএ কার্যালয়ের সামনে প্রতিকী অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা না হলে ৭ মার্চ থেকে আমরন অনশন করতে চাচ্ছেন প্রার্থীরা।
যদিও এনটিআরসিএ বলছে নানা আইনি জটিলতার শঙ্কায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে আইনি জটিলতার সমাধান চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে সংস্থাটি।
রোববার সকাল থেকে সারাদেশ থেকে আসা প্রার্থীরা এনটিআরসিএ কার্যালয়ে প্রতিকী অনশন শুরু করেন। এসময় দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। ‘এনটিআরসিএ করে কি? খায়, দায় ঘুমায় নাকি?’ স্লোগান দিতে থাকেন তারা। প্রতিকী অনশনরত প্রার্থীদের হাতে এ সময় দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড দেখতে পাওয়া যায়।
দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অসংখ্য শিক্ষক পদ শূন্য থাকার পরেও দীর্ঘদিন ধরে কোন নিয়োগ হচ্ছে না। নিবন্ধিত প্রার্থীরা হতাশায় দিন পার করছেন। অপরদিকে করোনা পরবর্তী সময়ে পিছিয়ে পরা শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে শিক্ষক নিয়োগ জরুরি বলে মন্তব্য করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন পরিস্থিতিতে গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে প্রতিকী অনশন করলেন প্রার্থীরা।
নিবন্ধিত প্রার্থী শান্ত আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো। আগামী ৭ মার্চ থেকে আমরা আমরণ অনশনে যাওয়ার কথা ভাবছি। সারাদেশ থেকে নিবন্ধিতরা প্রতিকী অনশন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। আমরা দ্রুততম সময়ে এনটিআরসিএকে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আহ্বান জানাই। তারা আইনি জটিলতার কথা বলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছন না। তারা কি করছেন বুঝতে পারছিনা।
অনশনরত প্রার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আইনি জটিলতার দেরিতে আমাদের বয়স ৩৫ ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্ত গতবছর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে না। প্রথমে করোনা পরে আইনি জটিলতা, নানা কথা বলে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হচ্ছে না। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে আমরা আবেদনের সুযোগ চাই।
এ পরিস্থিতিতে এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশে তৎপরতা শুরু হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে সার্বিক প্রেক্ষপট তুলে ধরে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আদালতের আদেশ ও নির্দেশগুলোর বিষয়েও জানানো হয়েছে। দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশে কি করা যায় সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনায় সে বিষয়গুলো জানানো হয়েছে। এ বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে মতামত দেবেন, সেভাবেই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের সুযোগ পেতে ১৩তম নিবন্ধনধারীরা রিট করেছিলেন। রিটকারী ২ হাজার প্রার্থীকে আবেদনের সুযোগ দিতে আদালতের নির্দেশনাও আছে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে আরও কিছু বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা আছে। কিছু হাইকোর্টের একটি আদেশ রিভিউয়ে এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু এ পরিস্থিতে ভার্চুয়াল কোর্ট চলমান থাকায় রিভিউ আবেদনগুলো শুনানি হচ্ছেনা। করোনা পরিস্থিতিতে সরাসরি কোর্ট কবে বসবে তা নিয়েও আছে অনিশ্চিত। এনটিআরসিএ ও শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত ৪ শতাধিক মামলা চলছে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ পরিস্থিতিতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশে কি করার আছে তা ভাবছেন এনটিআরসিএ কর্মকর্তারাও।
কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, এ মুহুর্তে দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চেষ্টা করছে এনটিআরসিএ। তবে, এ মুহুর্তে আপিল আবেদন নিষ্পত্তি বা অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে মতামত না আসা পর্যন্ত কিছুই করার নেই বলেও জানান তারা।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।