এনটিআরসিএর সুপারিশ পেয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেও অনেক প্রার্থী নানা জটিলতায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। এসব প্রার্থীদের মধ্যে যারা প্যাটার্নভুক্ত পদে নিয়োগ সুপারিশ পেয়ে যোগদান করেছেন, তাদের জটিলতা নিরসনের মতৈক্যে পৌঁছেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সুপারিশ পেয়ে প্যাটার্নভুক্ত পদে যোগদান করা প্রার্থীদের এমপিও জটিলতা নিরসনের উপায় খুঁজবে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএর) সুপারিশপ্রাপ্তদের এমপিও জটিলতা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় উপস্থিত সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনটিআরসিএ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও কয়েকজন আঞ্চলিক উপপরিচালক উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সভায় নবসৃষ্ট, মহিলা কোটা ও প্যাটার্ন জটিলতায় যেসব প্রার্থী এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না তাদের জটিলতা নিরসনে আলোচনা হয়েছে। সুপারিশ পেয়ে প্যাটার্নভুক্ত পদে যেসব প্রার্থী যোগদান করেছিলেন তাদের জটিলতা নিরসনে একমত পোষণ করেছেন সভায় অংশ নেয়া সব কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘যেহেতু তাদেরকে এনটিআরসিএ সুপারিশ করেছে, সেহেতু তাদেরকে এমপিওভুক্ত করার জন্য একবারের মতো সুযোগ দেয়া যেতে পারে। তবে, এমন সুবিধা ভবিষ্যতে কেউ দাবি করতে পারবে না।’
অপর একজন কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, সভায় এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিও জটিলতা কেন হচ্ছে সে বিষয়টি কর্মকর্তাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এনটিআরসিএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেধা তালিকায় এগিয়ে থাকা প্রার্থীদের প্যাটার্নভুক্ত পদে সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া অনেক প্রার্থী ননএমপিও বা প্যাটার্ন বহির্ভুত পদে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েছেন। সুপারিশ পত্রে বলা ছিল, যদি কোন প্রার্থী ননএমপিও পদে সুপারিশ পেয়ে যোগদান করেন তবে এমপিও দাবি করতে পারবেন না। তাই প্যাটার্নভুক্ত পদে যোগদান করেও যেসব প্রার্থী এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না তাদের জটিলতা নিরসনে উদ্যোগ নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে সভায়। সে বিষয়ে মতৈক্য পৌঁছেছেন সভা উপস্থিত কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি নবসৃষ্ট পদ ও মহিলা কোটার এমপিও জটিলতা নিরসনে সভাটি অনুষ্ঠিত হবার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছিল।
জানা গেছে, গত ১২ জুন জারি করা এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে কিছু পদ বৃদ্ধি পায়। গত ৩০ মে বেসরকারি স্কুল কলেজের এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামো অনুসারে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ১৬টি পদে নিয়োগের আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নবসৃষ্ট পদে নিয়োগ ও এমপিওভুক্তির আদেশে ভৌতবিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে শুরু করতে বলা হলেও এনটিআরসিএর মাধ্যমে ২য় নিয়োগ চক্রে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এসব পদে সুপারিশ পেয়ে যোগদান করেছেন কয়েকশ প্রার্থী। নিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণের আদেশ ও প্রকৃত নিয়োগের অর্থবছর আলাদা হওয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই, কয়েকশ প্রার্থী এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না।
এদিকে, এনটিআরসিএর সুপারিশ পেয়ে যোগদান করলেও সুপারিশকৃত প্রতিষ্ঠানের মহিলা শিক্ষক কোটা পূরণ না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না কয়েকশ শিক্ষক। মহিলা কোটা পূরণ না থাকায় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা তাদের এমপিও আবেদন অগ্রায়ন করছেন না। যদিও এমপিও পদ দেখেই নিয়োগ সুপারিশের জন্য আবেদন করেছিলেন তারা। মহিলাকোটার জটিলতায় গত ১০মাস ধরে এমপিভুক্ত হতে পারেননি তারা।