জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত নতুন কারিকুলাম ও শিক্ষাপদ্ধতি প্রণয়নের লক্ষ্যে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। এতে কিছু পরিমার্জন প্রয়োজন। রোববার (২২ নভেম্বর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
১. রূপরেখার ২.১১ অধ্যায় ৩০ পৃষ্ঠায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে ১০টি বিষয়—বাংলা, ইংরেজি, গণিত, জীবন ও জীবিকা, সামাজিকবিজ্ঞান, বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ভালো থাকা, ধর্মশিক্ষা এবং শিল্পসংস্কৃতি উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কৃষিশিক্ষা নেই! অথচ কৃষিপ্রধান এই দেশে কৃষিশিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন। কৃষিশিক্ষার জ্ঞান দিয়ে আত্মকর্মসংস্থান সম্ভব।
২. রূপরেখা ২.১৩.১ অধ্যায় ৮৫ পৃষ্ঠায় একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে নৈর্বাচনিক বিষয়ে কৃষিশিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। কারণ এইচএসসি পাস করে প্রতিবছর দু-তিন লাখ শিক্ষার্থী লেখাপড়া বাদ দেয়। কৃষিশিক্ষার জ্ঞান অর্জন কৃষি উত্পাদনে কাজে লাগতে পারে। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় কৃষিশিক্ষা ঐচ্ছিক গ্রুপে থাকায় শিক্ষার্থীরা কৃষিশিক্ষা পড়ে না। যার ফলে প্রতিবছর ১০-১২ লাখ শিক্ষার্থী কৃষির জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
৩. রূপরেখা ২.১৬ অধ্যায়ে ৯৬ পৃষ্ঠায় মূল্যায়ন ও রিপোর্টিং ব্যবস্থায় ৯ম-১০ম শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ ও সামষ্টিক মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ রাখা হয়েছে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যায়ন রাখা হয়েছে ৩০ শতাংশ ও সামষ্টিক মূল্যায়ন ৭০ শতাংশ। সামষ্টিক মূল্যায়ন বা পাবলিক পরীক্ষা/প্রাতিষ্ঠানিক পরীক্ষায় ১০০ নম্বর রাখা প্রয়োজন। শিখনকালীন মূল্যায়ন রাখা হলে শিক্ষার্থীরা মোটেও লেখাপড়া করবে না। তারা শিক্ষকদের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। রূপরেখার ৯৭ ও ৯৮ পৃষ্ঠায় একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষার প্রায়োগিক বা ঐচ্ছিক একটি বিষয়ে হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে শিখনকালীন মূল্যায়নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাত্ কোনো পরীক্ষা হবে না। পরীক্ষা ছাড়া নম্বর দিলে শিক্ষার্থী ঐ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারবে না।
বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় ৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণি পর্যন্ত বেশকিছু বিষয় আছে যেগুলোর পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম নেই। এই বিষয়গুলোতে প্রতিষ্ঠানের ভালো ফলাফলের জন্য শিক্ষার্থীদের পূর্ণ নম্বর দেওয়া হয়। এই বিষয়গুলো বিবেচনার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।
লেখক : ফরহাদ আহাম্মেদ, সহকারী অধ্যাপক, কৃষিশিক্ষা, ভূয়াপুর, টাঙ্গাইল