করোনা ভাইরাস মহামারি থাবায় দীর্ঘ দেড় বছর সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকার পর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে স্কুল-কলেজগুলোতে সীমিত পরিসরে ক্লাস চলছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা টিকা দেওয়ার পর নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে পুরোদমে ক্লাস শুরু হবে, সেই আশায় ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এরইমাঝে দেশে করোনার সাউথ আফ্রিকান ভেরিয়েন্ট 'ওমিক্রনে' আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই পুরোদমে স্কুল কলেজে ক্লাস শুরু হচ্ছে না। তবে, আগামী মার্চ মাসের করণা সংক্রমণ না বাড়লে এরপর স্কুল-কলেজে পুরোদমে কাজ শুরু হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর মাতুয়াইলে ছাপাখানা পরিদর্শন শেষে স্কুল-কলেজে পুরোদমে কাজ শুরু নিয়ে কথা বলেন তিনি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরোপুরি ক্লাস শুরু করার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ওমিক্রন নিয়ে এখনও শেষ কথা বলার সময় আসেনি। আমরা ইউরোপ, আমেরিকায় দেখছি ব্যাপকভাবে ওমিক্রন ছড়াচ্ছে। আমাদের আরও একটু দেখার দরকার। আমরা ভালো আছি, কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।'
মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়ে মার্চ মাসে। কাজেই মার্চ না আসা পর্যন্ত আমরা বলতে পারবো না আমরা নিরাপদ অবস্থায় আছি কি না। অন্য প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক অবস্থায় যাওয়া যাবে না। আমরা স্কুলকে বলতে পারি না, শিক্ষার্থী অর্ধেক বাড়িয়ে দাও। মার্চে যদি না বাড়ে তাহলে আমরা বলতে পারি পুরো সময় ধরে বিদ্যালয় চলবে।
আরও পড়ুন : করোনার কারণে এবারও বই উৎসব হবে না : শিক্ষামন্ত্রী
ডা. দীপু মনি বলেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯৫ শতাংশের বেশি বিনামূল্যের পাঠবই পৌঁছে যাবে। বাকি বই আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছে যাবে। শিক্ষার্থীরা সময় মতো বই হাতে পেয়ে যাবেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ১৭ কোটির বেশি বই বাঁধাই হয়ে গেছে। আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে সবটাই হয়ে যাবে। তারপরও স্বল্প সংখ্যক বাদ থাকতে পারে। সেটাও আমরা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শিশুদের হাতে দিতে পারবো।[inside-ad-]
মন্ত্রী বলেন, অতিমারির কারণে এ বছরও বই উৎসব করার মতো পরিস্থিতি আমাদের নেই। সব স্কুলেই ক্লাস ধরে ধরে বই বিতরণ করা হবে। যখন যে শিক্ষার্থীর বই পাওয়ার কথা সে সময় শিক্ষার্থীরা বই পাবে। এতে কোনও রকম সমস্যা হবে না।’
দীপু মনি বলেন, বই ছাপার কাজ সবটুকুই শেষ হয়ে গেছে। এনসিটিবির পক্ষ থেকে সপ্তাহে দুই দিন প্রেস পরিদর্শনে আসে। ২০০টি প্রেসে কাজ চলছে ১৫৮টি মাধ্যমিকে আর ৪২টি প্রাথমিকে। আর যে কোম্পানিকে দায়িত্ব দেওয়া আছে, তারাও নিয়মিত পরিদর্শনে আসেন।
২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে দেশে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হচ্ছে। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং শুরু হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নিম্নমানের বই দিলে সরবরাহকারী মূদ্রণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।