ভাতা পাবেন সেই মেধাবীদের মেধাবী রাজকুমার - দৈনিকশিক্ষা

ভাতা পাবেন সেই মেধাবীদের মেধাবী রাজকুমার

দিনাজপুর প্রতিনিধি |

মেধাবী ছাত্র রাজকুমার শীল (৫৬)। দারিদ্রতার কষাঘাতে বেড়ে উঠলেও নামের সঙ্গে রয়েছে রাজকীয় ভাব, চেহারাতেও রয়েছে সেই ছাপ। মেধার খেলায় চমক দেখিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পাড়ি দিয়েছেন বেশ কয়েকটি কঠিন ধাপ। কিন্তু নিয়তির কি পরিহাস! অবশেষে স্বাস্থ্য বিড়ম্বনায় যাত্রা থেমে যায় তার সামনে অপেক্ষাকৃত স্বফলতার পথ। 

অসহায় ও মানষিক ভারসাম্যহীন ঢাকা মেডিকেলের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ‘রাজ কুমার শীল’এর পরিবারের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন বিরামপুর উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর। সরকারিভাবে ওই পরিবারের দুই ভাইকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মানষিক ভারসাম্যহীন ঢাকা মেডিকেলের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজকুমার শীল | ছবি: সংগৃহীত

সোমবার সন্ধ্যায় বিরামপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. রাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর আগে রাজ কুমার শীলের মা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিবন্ধী কার্ডে চিকিৎসকের স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের নজরে আসে বিষয়টি।

আরও পড়ুন: মেধাবীদের মেধাবী রাজকুমার এখন ৩০ টাকার দিনমজুর! 

রাজকুমার শীলের বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুর পৌরশহরের ঘাট পাড় এলাকায়। নগিন শীল ও  মা পার্বতী রাণীর ছেলে তিনি। বাবা নগিন শীল পেশায় একজন নাপিত। পরিবারের চার ভাইয়ের মধ্যে সে মেঝ। এ ছাড়াও ২ বোন রয়েছে। 

বেশ কিছুদিন আগে রাজ কুমার শীল’র মা পার্বতী রাণী বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর চিকিৎসককে ছেলের শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজ সত্যায়িত করতে যান। তার দু’টি ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য কার্ড করতে এ কাগজ দরকার ছিল। এসময় ডা. বেলায়েত হোসেন কাগজ হাতে নিয়ে রাজ কুমার শীলকে জিজ্ঞাসা করেন পড়াশোনা কত দূর করেছেন। তখন রাজ কুমার শীল নিজেকে ঢাকা মেডিকেলের ছাত্র বলে পরিচয় দেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে ডা. বেলায়েত হোসেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে রাজ কুমার শীলের জীবনের গল্প তুলে ধরেন। মুহূতেই সেই ফেসবুক স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে যায়।  

মা পার্বতীশীল বলেন, ছোট বেলা থেকেই রাজকুমার শীল খুবই মেধাবি, প্রাথমিক ও জুনিয়ার বৃত্তি পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছিল। ১৯৮০ সালে বিরামপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করেছে। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করার পর ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলেও দ্বিতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষায় ফার্মাকোলজিতে অকৃতকার্য হওয়ার পর দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও ভালো রেজাল্ট করতে না পেরে গুরুতর মানসিক অসুস্থতায় ( সিজোফেনিয়া) পড়ে যায়। এর পর দীর্ঘ ১৪/১৫ বছর ধরে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় রাজকুমার শীল।২০০৭ সালে সে নিজেই বাড়িতে ফিরে আসে। এর মধ্যে একবছর পাবনা মানষিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। রাজ কুমার শীলের আরেক ভাই আনন্দ শীল (৫০) ঢাকা তিতুমির কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছিল। তিনিও একই রোগে আক্রান্ত হয়ে স্নাতক সম্পন্ন করতে পারেননি।

মা পার্বতী রাণী ছেলের এসব কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, রাজকুমারের বাবা ৭ বছর আগে মারা গেছে। আমার তৃতীয় ছেলে গোবিন্দ ঢাকায় পত্রিকায় কাজ করে। সেই এ সংসার চালতো। কিন্তু সেও কিছুদিন থেকে অসুস্থ হয়ে সন্তান-ছেলেমেয়ে নিয়ে ঢাকায় আছে। এখন আমার ছোট ময়ে জেনিয়া দেবী ঢাকায় চাকরি করে। সেই এখন আমার সংসারে সাহায্য করছে। 

পার্বতী রাণী আরও বলেন, আজ যদি ছেলে রাজ কুমার শীল ডাক্তারি পাশ করতো সংসারে এত অভাব থাকতো না। সামর্থবান না হওয়ায় তাদের সাহায্যার্থে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য দরখাস্ত করেছি। এই অসহায় পরিবারের জন্য মেধাবি রাজ কুমার শীলএর মা পার্বতী রাণী শীল সমাজের বিত্তবাণ দানশীল ব্যক্তিবর্গের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। 

রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035920143127441