মেডিকেল ভর্তির খরচ নিয়ে শঙ্কায় মেধাবী শিক্ষার্থী আশরাফুল - দৈনিকশিক্ষা

মেডিকেল ভর্তির খরচ নিয়ে শঙ্কায় মেধাবী শিক্ষার্থী আশরাফুল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি |

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের দরিদ্র কৃষক বাবার সন্তান আশরাফুল ইসলাম সুযোগ পেয়েছেন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে। ইতোমধ্যে ভর্তিও হয়েছেন। তবে ভর্তি হওয়ারও টাকা ছিল না। স্থানীয় এক শিক্ষকের মাধ্যমে শরণাপন্ন হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজগর আলীর। তিনি ভর্তির জন্য ১৫ হাজার টাকা দেন। বাকি ছয় হাজার টাকা ধারদেনা করে ভর্তিও হন। কিন্তু এখন উপায়! মেডিকেলে ব্যয়বহুল পড়াশোনা চালাবেন কী করে- এই চিন্তাই এখন ঘোরপাক খাচ্ছে আশরাফুলের মাথায়।

আশরাফুলের বাড়ি নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা গ্রামে। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। বাবা লিয়াকত আলী গ্রামের দরিদ্র কৃষক। অন্যের জমিতে দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করেন। মা আলিমুন্নেছা বেগম গৃহিণী। পাঁচজনের টানাটানির সংসারে যেখানে ঠিকমতো তিনবেলা খাবার জোগানোই কঠিন, সেখানে এই পরিবারের কারও পড়াশোনা যে বিলাসিতা। আশরাফুলের ভাগ্য ভালো প্রচণ্ড মেধা নিয়ে জন্মেছেন।

তাই আত্মীয়-স্বজন ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় এইচএসসি পাস করতে পেরেছেন। সব পরীক্ষায় তার ফলও ঈর্ষা করার মতো। কুণ্ডা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পান। নরসিংদীর আব্দুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পেয়ে যান সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে। গত ২৪ অক্টোবর ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

তবে আশরাফুলের ইচ্ছা ছিল বুয়েটে পড়বেন; বড় প্রকৌশলী হবেন। বাবার ইচ্ছাতেই মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া। বাবা চান ছেলে মস্ত ডাক্তার হবে। গ্রামের দরিদ্র মানুষজনকে বিনামূলে চিকিৎসা দেবে। বাবার চাওয়া আর ফেলতে পারেননি আশরাফুল। এখন চারদিক থেকে মেডিকেলে পড়ার খরচের কথা শুনে অন্ধকার দেখছেন। নিজের মনেই প্রশ্ন- 'পারব তো বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে?'

আক্ষেপ করে আশরাফুল বলেন, বাবার যা আয় তাতে সংসারই ঠিকমতো চলে না। বড় ভাই ঢাকায় এক বোরকার দোকানে চাকরি করতেন, সেটা ছেড়ে এলাকায় চলে এসেছেন। এখন বেকার। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আশরাফুল বলেন, বিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে খাতা-কলম কেনারও টাকা ছিল না। শিক্ষকরা বিনামূল্যে পড়াতেন। স্কুলও বেতন নিত না। এসএসসির ফরম পূরণের টাকা দিয়েছেন বাবার এক বন্ধু, নাম তাজুল ইসলাম।

আশরাফুলের বাবা লিয়াকত আলী বলেন, 'আমি একজন গরিব কৃষক। অন্যের জমিতে কাজ করি। যা পাই তাতে সংসার চালানোই কঠিন। ছেলের ভর্তির জন্য টাকা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। এমনকি পড়াশোনার খরচ চালানোর সামর্থ্যও আমার নেই। এতদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষক, মেয়ের জামাই ও ভাইয়ের সহায়তায় সে লেখাপড়া করেছে। তার বড় ভাইয়ের এখন কোনো কাজও নেই। যদি কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ান, তাহলে আমি তার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব।'

কুণ্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহিদুল হক বলেন, ছেলেটি খুব মেধাবী। এলাকার গর্ব। বিদ্যালয়ে পড়াকালীন তার কাছ থেকে এক টাকা বেতন বা পরীক্ষার ফি নেওয়া হয়নি।

ইউএনও আজগর আলী বলেন, স্থানীয় এক শিক্ষকের মাধ্যমে এই মেধাবী শিক্ষার্থীর কথা শুনেছি। পরে উপজেলা প্রশাসনের তহবিল থেকে ১৫ হাজার টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আশরাফুল অনেক মেধাবী। সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তিরা তার পাশে দাঁড়ানো উচিত।

রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036931037902832