জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেছেন, ঢাক পোস্টকে রাখাল রাহার বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেইনি।
মঙ্গলবার এনসিটিবি কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। প্রফেসর এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, প্রকাশিত রিপোর্টের কোনো সত্য তথ্য নেই।
আরো পড়ুন: বিদেশি চক্রান্তের শিক্ষাক্রম চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো: এনসিটিবি
এ সময় এনসিটিবিকে জড়িয়ে ও পাঠ্যবইয়ের কাগজ কেনার কমিশন বাণিজ্যের দাবি তুলে সম্প্রতি প্রকাশিত সংবাদে আপত্তি জানান এনসিটিবি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এনসিটিবির পাঠ্যবই ছাপার কাগজ কেনার সঙ্গে রাখাল রাহার কোনো সম্পর্কেই নেই। এ ব্যাপারে তিনি আসলে কিছুই জানেন না। কাগজ কেনার টেন্ডার শুরুর আগেই তিনি চলে গেছেন।
আরো পড়ুন: রাখাল রাহার বিরুদ্ধে ৪০০ কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য অপপ্রচার: এনসিটিবি
বিষয়টি আরো পরিষ্কার করে রিয়াজুল হাসান প্রশ্ন তোলেন, ঢাকা পোস্টের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সদ্য সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ স্যারের ছাত্র হিসেবে নাকি রাখাল রাহা পরিচয় দিতেন এবং এ পরিচয়ে তিনি প্রভাব খাটিয়েছেন- এই তথ্য মোটেই সত্য নয়। পাঠ্যবইয়ের কাগজই কেনা হয়েছে ১০০ কোটি টাকার, সেখানে কীভাবে ৪০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হবে?
আরো পড়ুন: রাখাল রাহার ভাষায় তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত যারা
তিনি বলেন, ঢাকা পোস্ট ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। মিথ্যে গল্প সাজিয়েছে। প্রকৃত অর্থে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আমার এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি। সেখানে আমাকে কোট করে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তা ভিত্তিহীন। এটা আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন এনসিটিবি সচিব শাহ্ মুহাম্মদ ফিরোজ আল ফেরদৌস, পাঠ্যপুস্তক সদস্য প্রফেসর ড. রিয়াদ চৌধুরী, শিক্ষাক্রম সদস্য প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী, প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফাতিহুল কাদীর ও ছাপাখানার প্রতিনিধিরা, কাগজ আমদানিকারকেরা।
এ ছাড়াও প্রেস ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন ছাপাখানার মালিক ও আমদানিকারকদের প্রতিনিধিরাও কাগজ কেনার কার্যক্রম স্পষ্ট করেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রসঙ্গত, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট ও ডেইলি ক্যাম্পাস সম্প্রতি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, চলতি বছর পাঠ্যবই ছাপায় কাগজের বাজারদরের চেয়ে টনপ্রতি ১৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা বেশি দিতে হয়েছে মুদ্রণপ্রতিষ্ঠানগুলোকে। নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ না কিনলে বই ছাপার ছাড়পত্র মিলত না। কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ কিনতে হবে তা নির্ধারণ করে দিত এনসিটিবি। যা এর আগে কখনও হয়নি। অভিযোগ আছে, এর নেপথ্যে ছিলেন এনসিটিবির সচিব, একজন সদস্য ও সাজ্জাদুর রহমান ওরফে রাখাল রাহা। তাদের পেছনে থেকে কাজ করেছেন তানভীর নামের এক ছাত্র-সমন্বয়ক। সর্বশেষ চীন থেকে সাড়ে আট হাজার টন কাগজ আমদানি করে এনসিটিবি। বাজারে এক লাখ ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় কাগজ পাওয়া গেলেও মুদ্রণপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জিম্মি করে টনপ্রতি দাম নেওয়া হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা করে।
ওই প্রতিবেদনকে ভুয়া বলে উল্লেখ্য করে এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকা পোস্ট, ডেইলি ক্যাম্পাস উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এমন নিউজ করেছে। কারণ আমরা কাগজই কিনেছি ১০০ কোটি টাকার। এখানে কেমন করে ৪০০ কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য হবে।