শিক্ষকদের ভালো বেতন নাই, কিন্তু প্রজেক্ট থামছে না: অধ্যাপক মামুন | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

শিক্ষকদের ভালো বেতন নাই, কিন্তু প্রজেক্ট থামছে না: অধ্যাপক মামুন

শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।

#শিক্ষা #শিক্ষার্থী #শিক্ষক

সম্পদের অপ্রতুলতার কারণে শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মানী দেওয়া যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার। শিক্ষা উপদেষ্টার এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন।

সোমবার (১২ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে অধ্যাপক মামুন বলেন, ‘সম্পদের ‘অপ্রতুলতায়’ শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মানী দেওয়া যাচ্ছে না’ এই কথাটি আমি মানতে পারলাম না বলে আমি দুঃখিত। সম্পদের অপ্রতুলতা সত্বেও সরকারতো শিক্ষা খাতে অপ্রয়োজনীয় খরচতো কম করছে না।

শিক্ষকদের ভালো বেতন নাই কিন্তু এর মধ্যে ডিজিটাল ক্লাসরুম প্রজেক্ট, ক্লাসে স্মার্ট টিভি প্রজেক্ট, নতুন কারিকুলাম প্রজেক্ট ইত্যাদি থামছে না। ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম পারলে আমরা কেন পারব না? অবশ্যই ভালো করার নিয়তই আসল।

আরো পড়ুন

শিক্ষকরাই এই দেশে সবচেয়ে নিপীড়িত

শিক্ষকদের উন্নত সুবিধা না দিলে সুন্দর মানুষ তৈরি হবে না

বাংলাদেশের মতো বেতন বৈষম্যের দেশ খুব কম আছে

সম্পদের ‘অপ্রতুলতায়’ শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মানী দেওয়া যাচ্ছে না

তিনি বলেন, ১০ বছর আগে ভিয়েতনাম কি আমাদের চেয়ে সম্পদশালী ছিল। গত ১০-১২ বছর ধরে তারা কিভাবে শিক্ষায় জিডিপির ৪ শতাংশের বেশি বরাদ্দ দিয়ে আসছে এবং শিক্ষকদের ভালো সম্মানী দিয়ে আসছে?

২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ২,৬২১ মার্কিন ডলার, যেখানে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ২,৬১২ মার্কিন ডলার। এই পরিসংখ্যানটি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে, অর্থনৈতিক পরিমাপে বাংলাদেশ সামান্য হলেও ভারতের থেকে এগিয়ে ছিল।

কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই পার্থক্য সত্বেও ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমাদের তুলনায় প্রায় ৩ গুণ বেতন বেশি পায়। যদিও ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি বাংলাদেশের তুলনায় বেড়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে পাকিস্তনের মাথাপিছু জিডিপি বাংলাদেশের তুলনায় বেশ কম তথাপি তারা কিভাবে তাদের শিক্ষকদের সম্মানী প্রায় ভারতের সমান দেয়।

শুধু তাই না পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের শিক্ষকদের বেতন সবচেয়ে কম কিন্তু জীবনযাত্রার ব্যয় সবচেয়ে বেশি। এই পার্থক্য শুধু অর্থনৈতিক নয়, এটি শিক্ষাব্যবস্থার মান, শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা এবং গবেষণার সুযোগকেও প্রভাবিত করে।

উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষক আবশ্যক, আর তাদের যথাযথ পারিশ্রমিক না দিলে সেই প্রতিভা ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে।

আরো পড়ুন

মেধার মূল্যায়নে দল-মত-ধর্ম টানা অনুচিত

শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে

ভালো বেতন দিয়ে শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় করতে হবে

সুতরাং, অর্থনৈতিক সূচকে সামান্য এগিয়ে থাকলেও, শিক্ষকদের যথাযথ মূল্যায়ন না করার এই বৈষম্য বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।

ভারত যেখানে তার শিক্ষকদের প্রাপ্য সম্মান ও আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করছে, সেখানে বাংলাদেশের এই ঘাটতি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে।

বাংলাদেশে এখন যেই মব সংস্কৃতি দেখেছেন, সাংস্কৃতিক অধঃপতন দেখছেন, পরিবেশ ধ্বংস দেখছেন, দুর্নীতি অসততার ঊর্ধ্বগতি দেখছেন এইসবের পেছনের মূল কারণ শিক্ষার মানের অধঃপতন, বলেন অধ্যাপক মামুন।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#শিক্ষা #শিক্ষার্থী #শিক্ষক